ইন্টারনেটের মাধ্যমে নির্দিষ্ট ৫০টি বিজ্ঞাপনে ক্লিক করলেই প্রতিদিন দেড় ডলার করে পাবেন। মাসে ৪৫ ডলার। যা বর্তমানে বাংলাদেশি টাকায় প্রায় পৌনে চার হাজার টাকা। কেবল সাড়ে সাত হাজার টাকার বিনিময়ে সদস্য হলেই কমপক্ষে ১২ মাস এই ডলার আয়ের লোভনীয় সুযোগটি পাওয়া যাবে। এমন চটকদার ও লোভনীয় কথার যাদুতে জড়িয়ে খুলনার বেশ কয়েকটি নাম সর্বস্ব ইন্টারনেটভিত্তিক এমএলএম কোম্পানি কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। বেকার তরুণ, যুবক, শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে গৃহবধূরাও এই প্রতারণার ফাঁদে জড়িয়ে পড়ছেন। ইতোমধ্যে কয়েকটি কোম্পানির লোকজন কমপক্ষে এক কোটি টাকা হাতিয়ে আত্দগোপনও করেছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ বিষয়টি প্রশাসনকে জানালেও কাজ হচ্ছে না। প্রশাসনের নাকের ডগায় চলছে এ ডিজিটাল প্রতারণার কারবার।
অনুসন্ধানে জানা যায়, খুলনা মহানগরীর নিরালা এক নম্বর সড়কের বড় মসজিদের পাশের চারতলা একটি ভবনের তিনটি ফ্লোর ভাড়া নিয়ে খোলা হয়েছে ‘ল্যান্সটেক’ নামের একটি নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান। স্থানীয় হাবিবুল বাশার মুন ও সুপ্রকাশ সরকার নামের দুই ব্যক্তি গত ৩ মাস ধরে ‘ল্যান্সটেক’র কার্যক্রম চালাচ্ছে। তারা খুলনার উঠতি বয়সী শিক্ষার্থী ও যুবকদের ইন্টারনেটে বিজ্ঞাপনে ক্লিক করলেই ডলার আয়ের লোভনীয় কথা বলে সদস্য অন্তর্ভুক্তি করছে। এ জন্য প্রতিজনের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে সাড়ে সাত হাজার টাকা।এই প্রতিষ্ঠানের একাধিক সদস্য জানায়, সদস্য হলেই ল্যান্সটেকের নিজস্ব সফটওয়্যারের মাধ্যমে প্রতিদিন সদস্যদের ই-মেইল আইডিতে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ৫০টি বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানির পণ্যের বিজ্ঞাপন পাঠানো হয়। সদস্যরা ওই বিজ্ঞাপনগুলোতে ক্লিক করলেই তাদের অ্যাকাউন্টে দেড় ডলার করে জমা হয়। একজন সদস্য কমপক্ষে ১২ মাস এই ডলার আয় করতে পারবে বলে মৌখিক নিশ্চয়তা দেওয়া হচ্ছে। এ জন্য কোনো কাগজপত্র দেওয়া হচ্ছে না। ল্যান্সটেকের চেয়ারম্যান হাবিবুল বাশার মুন বলেন, বিদেশি একাধিক বিজ্ঞাপনী সংস্থা আছে যারা বিভিন্ন পণ্যের বিজ্ঞাপনের ওয়েবে ‘ক্লিক রেটিং’ বাড়াতে তাদের বিজ্ঞাপনে ক্লিকের জন্য অর্থ ব্যয় করে। এরকম সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করে তা সদস্যদের মধ্যে বিতরণ করে বেকার তরুণ যুবকদের আয়ের সুযোগ করে দিয়েছি। সদস্যদের কাছ থেকে যে টাকা নেওয়া হচ্ছে তা সার্ভিস চার্জ মাত্র। এই আর্থিক লেনদেনের জন্য সরকারি অনুমতিপত্র বা বিদেশি বিজ্ঞাপনী সংস্থার সঙ্গে চুক্তির কাগজপত্র আছে কিনা এর উত্তরে বলেন, সবেমাত্র শুরু করেছি। খুব শীঘ্রই সব গুছিয়ে আনা হবে। তাদের সদস্য লক্ষমাত্রা ১২ হাজার।